কেয়ামতের দিন কী কী হবে

কেয়ামতের দিন কী কী হবে?

কেয়ামত কী বা কাকে বলে?

কেয়ামত আরবি শব্দের কিয়াম থেকেই আসছে।কেয়ামত শব্দের অর্থ উঠে,মহাপ্রলয়, পুনরুত্থান ও দাঁড়ানো। বিশ্বজগত ধ্বংসের দিনকেই কেয়ামত বলা হয়। কেয়ামতে পরে একটা প্রাণিও এই বিশ্বজোরে বেচে থাকবেনা। হযরত ইসরাফিল (আঃ) আল্লাহ নির্দেশে শিঙ্গায় ফুৎকার দিয়ে কেয়ামত শুরু করবেন। ইসরাফিল (আঃ) এর ফুৎকারের ফলে মহাআকাশে গ্রহ নক্ষত্র থেকে শুরু করে, জীব জন্তু যত প্রাণি আছে সব ধ্বংস হয়ে যাবে। কেয়ামতের দিন কী কী হবে মানুষ তা কল্পানো করতো পারেনা। 

 

কেয়ামত কখন বা কী বারে হবে?

কেয়ামত কখন হবে এই জ্ঞান শুধু আল্লহর তায়ালা জানেন। মোহাম্মদ (সঃ) এর নির্দেশ অনুযায়ী শুক্রবারে কেয়ামত হরে। কেয়ামতের দিন কী কী হবে হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর সম্পর্কে কিছু ধারানা দিয়েছে এবং বলেন কেয়ামতের দিন কী রকম কষ্টদায়ক হবে তা মানুষের কম্পানা শক্তির বাহিরে। কেয়ামত শুরু হবে সকাল বেলা থেকেই, যখন সূর্য পশ্চিম দিকদিয়ে উদয হবে। যেদিন সূর্য পশ্চিম দিকে উদয হবে তখন থেকে তাওবার দরজা বন্ধ হয়ে যাবে অথ্যাৎ আর তাওবা করলো তাওবা আর কবুল হবেনা।

কী কারণে কেয়ামত হবে?

হযরত মোহাম্মদ সঃ বলেছে কেয়ামত হবার জন্য

কেয়ামতে কতগুলো আলামত আছে। তার মধ্যে কিছু বড় আলামতে কথা বলেছেন আর কিছু ছোট আলামতে কথা বলেছে। কেয়ামতের বড় আলামতের মধ্যে একটিও যদি প্রকাশ পায় তাহলে কেয়ামত সংঘটিত হবার জন্য আর বেশি দিননেয়। কারণ কেয়ামত বড় ১০টি আলামত প্রকাশ পাবার আগে অনেক গুলো ছোট আলামত প্রকাম পেয়েগেছে। আর ছোট আলামতের মধ্যে অল্প কিছু আলামত আছে যা এখনো প্রকাশ পায়নি আলহামদুলিল্লাহ। 

✪ কেয়ামতের দিন কী কী হবে এবং কেয়ামত কিভাবে হবে?

কেয়ামত হবে শিঙ্গায় ফুৎকারের মধ্যে দিয়ে।কেয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তায়ালা এর আর্দেশে হযরত ইসরাফিল (আঃ) শিঙ্গায় তিনটি ফুৎকার দিবেন।কেয়ামতে দিনে কি হবে, কিয়ামত কি ভাবে সংঘটিত হবে তার কথা বল হয়েছে সূরা আল যিলযাল। সেই দিন সূর্য আর পূর্ব দিকে উদয হবে না, সেই দিন সূর্য উদয হবে পশ্চিম দিক দিয়ে। আর সূর্য পশ্চিম দিক দিয়ে উদয হলে তওবার দরজা বন্ধ হয়ে যাবে।

প্রথম ফুৎকায় কেয়ামতের দিন কী কী হবে?

হযরত ইসরাফিল (আঃ) শিঙ্গায় প্রথম ফুৎকার দেওয়াই এমন এক শব্দ হবে, যার মত বিকট বড় শব্দ বিশ্বজগৎ আর শুনেনি। সেই  শব্দের ভয়ে লক্ষ কোটি প্রাণ হানী হবে। এমন বড় শব্দ যা মানুষের কানের এবং মানুষের শরীরের সহ্য ক্ষাতার বাহিরে। যে সব নারী বা মায়েদের পেটের মধ্যে বাচ্চা আছে সব প্রসব বা ডেলিভারি হয়ে যাবে। অপরি পাক্ষিত বাচ্চা হতে পারে কারো বয়স দুই মাস হতে পারে এর থেকে বেশি। এর থেকে বেশি ভয়ংকর হবে যা ভাবা চিন্তার বাইরে। যার যার ভয়ে সেই পালানোর প্রচেষ্টা করবে। যে মা সব চেয়ে বেশি সন্তার কে ভালোবাসে সেই মা সন্তান রেখে পালাবে (আস্তাগফিরুল্লাহ)। শুধু “মা” না, বাবা, ভাই, বোন,স্বামি, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও সকলেই যার যার ভয়ে সেই সেই পালানোর চেষ্টা করবে। কিন্তু সেই দিন আর লোকানোর মত জায়গা থাকবে না। কেয়ামতের দিন পৃথিবী এমন ভাবে ঝাঁকানি দিবে পাহাড়- পরবত তুলার মত করে উড়তে শুরু করবে। অতঃপর খাল-বিল, নদী-নালা, পাহাড়-পরবত, আল্লাহ সৃষ্টি ও মানব সৃষ্টি যা কিছু আছে সব ধ্বংস হয়ে যাবে। পাহাড়ের নিচে যত অমূল্য ধন সম্পদ আছে, সব বের হয়ে আসবে। সমুদ্রের নিছ থেকে লাভা বের হয়ে আসবে এবং পানির মধ্যে আগুন জলবে। কেয়ামতের দিন কী কী হবে, এই ভয়াবহ দিন সম্পর্কে শুধু মাত্র আল্লাহ জানেন। 

দ্বিতীয় ফুৎকায় কেয়ামতের দিন কী কী হবে?

✔ মানব জাতিদের কেয়ামতের দিন কী কী হবে?

কেয়ামতের দিন প্রতিদিনের মত যার যার মত করে নিজ নিজ কাজে ব্যাস্ত থাকবে। কেও থাকবে নামায পড়ার অবস্তায়, আর কেও থাকবে নাছ-গানের অবস্তায়, আর কেও বা থাকবে দৈনদিনের কাজের ব্যাস্ততায়। অতঃপর মালাকুল মাউত বা আজরাইল (আঃ) আসবেন এক এক করে জান বা রুহ কবজ করার জন্য। মালাকুল মাউত মানব জাতি সকলের জান কবজ করবে। পেশায় যে যা কাজ করুক না কেন, হোক সে স্যার, হোক সে হোজুর, হোক সে আলেম, হোক সে মোহাদ্দেস ইত্যাদি ইত্যাদি। মালাকুল মাউত বা আজরাইল (আঃ) সব প্রাণির জান বা রুহ কবজ করা শেষ হবে।

✔ জ্বিন জাতিদের কেয়ামতের দিন কী কী হবে?

মালাকুল মাইত আল্লাহর তায়ালকে বলবেন মানব জাতির মধ্যো আর কেও বেঁচেনেয়।এরপরে আল্লাহর তায়ালা মালাকুল মাউত বা আজরাইল (আঃ) কে বলবেন যাও জ্বিন জাতিদের জান বা রিহ কবজ কর। জ্বিন এর সংখ্যা কত শুধুমাত্র আল্লাহর জানেন আর কেয়ামতের দিন মালাকুল মাউত বা আজরাইল (আঃ)জানবে জ্বিনের সংখ্যা এবং মালাকুল মাউত কাজে লেগে যাবেন। অতঃপর মালাকুল মাউত এক এক করে সকল জ্বিনের জান বা রুহ কবস করা শেষ করবেন। 

✔ ফেরাশতা জাতিদের কেয়ামতের দিন কী কী হবে?

মালাকুল মাইত বা আজরাইল (আঃ) আল্লাহর তায়ালকে বলবেন জ্বিন জাতির মধ্যো আর কেও বেঁচেনেয়। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা আবার আর্দেশ দিবেন মালাকুল মাউত বা আজরাইল (আঃ) কে ফেরেশতাদের জান কবজ করার জন্য। যে ফেরাশতাদের সংখ্যা শুধুমাত্র আল্লাহর জানের, আর কেয়ামতের দিন আল্লাহর তায়াল মালাকুল মাউতকে ফেরেশতাদের সংখ্যা সম্পর্কে জ্ঞান দিবেন। মালাকুল মাউত সেই অসংখ্যা ফেরেশতাদের এক এক করে সকলের জান বা রুহ কবজ করবেন। সকল ফেরাশতাদের জান কবজ বা রুহ কবজ করা হয়ে যাবে। শুধু মাত্র চার জন ফেরেশতা ছাড়া সকল ফেরেশতাদের জান কবজ করা হবে। কারণ এই চার জন ফেরেশতা বড় বড় চারটি কাজে নিয়জিত এবং এই চারটি ফেরেশতাদের সৃষ্টি করা হয়েছে শুধুমাত্র চারটি কাজের জন্য।

✔ চারজন বড় ফেরেশতার মৃ্ত্যু

সব ফেরেশতার মৃ্ত্যু পরে মালাকুল মাউত বলবে হে মহান আল্লাহর সকল ফেরেশতাদের জান বা রুহ কবজ করা শেষ। তার আল্লাহর বলবেন যাও এখন চারজন বড় ফেরেশতার জান বা রুহ কবজ কর। যে চার জন ফেরেশতাদের সবার শেষে জান কবজ বা রুহ কবজ করা হবে তাদের নাম হলো ১/ জিবরাঈল (আঃ) ২/ মীকাঈল (আঃ) ৩/ ইসরাফিল (আঃ) ও ৪/ মালাকুল মাউত বা আজরাইল (আঃ) অতঃপর বড় তিন ফেরেশতা রুহ কবজ করবেন।

✔ মালাকুল মাউত এর মৃ্ত্যুর ঘটনা বা আজরাইল (আঃ) এর মৃ্ত্যুর ঘটনা

মালাকুল মাউত আল্লাহর তায়ালকে কে বলবেন হে মহান রব সকল ফেরেশতাদের জান বা রুহ কবজ করা শেষ। আল্লাহ তায়ালা বলবেন হে মালাকুল মাউত আর কে বেচে আছে এই বিশ্ব জগৎতে? তখন মালাকুল মাউত বলবেন শুধু মাত্র আমি আছি হে বর। অতঃপর মালাকুল মাউতকে আল্লাহর বলবেন তোমার রুহ কবজের সময়। এখন নিজে নিজেই রুহ কবজ কর। মালাকুল মাউত আল্লাহর আর্দেশ শুনে ভয় পেয়ে যাবে। জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝখানে অবস্থিত আরাফ নামক জায়গায় রুহ কবজ কর। মালাকুল মাউত তখন আরাফ নামক জায়গায় নিজের জান কবজ করবে। মহানবি হযরত মোহাম্মদ (সঃ) বলেছেন মালাকুল মাউতের রুহ কবজে কষ্টে এমন এক চিৎকার দিবেন যদি মানব জাতি বেচে থাকতেন তা হলে হযরত ইসরাফিল আঃ এর থেকে আলাদা করে ফুঁৎকার দেওয়ার প্রয়োজন থাকতো না। এর ভয়ে মানব জাতি সব তৎক্ষণাৎ মারা যেত।  

তৃত্বীয় ফুৎকায় কেয়ামতের দিন কী কী হবে?

দ্বিতীয় ফুৎকায় কেয়ামতের তিন শেষ হয়ে যায়। এর পরে কত বছর ফাঁকা অবস্তায় থাকবে শুধুমাত্র আল্লাহর জানেন। অতঃপর আল্লাহর তায়াল হযরত ইসরাফিল আঃ কে আবার সৃষ্টি করবে এবং তৃত্বীয় ফুৎকার দিতে বলবে। তৃত্বীয় ফুৎকার দেবার সাথে সাথেই এই বিশ্বে যত প্রাণি ছিল সব জিবীত হবে। আর পুনরায় জিবীত হবার দিবস কে বলা হয় আখিরাত। সকল প্রাণিকে পুনরায় জিবিত করার পরে আবার কত হাজার বছর থেকে যাবে তাও শুধু মাত্র মহান আল্লাহর জানেন। আর সেইদিন সূর্য মাত্র এক বা দুই মাইল নিকটে আনা হবে। যার যার গুনাহ আনুযাবি গাম হবে! অথ্যাৎ কারে পায়ের গুড়ালি পর্যন্ত, কারো হাটু পর্যন্ত, কারো গলা পর্যন্ত, আর কারো মূখ পর্যন্ত। এমনতো অবস্তায় কত হাজার বছর হবে? এই আখিরাতের দিনেয় হিসাব দিবস বলা হয়। কে কী করেছেন পুরা-জিবনজুরে সেই দিন সব হিসাব করা হবে। সেই দিন বিচার দিবসের বিচার প্রতিহবে মহান আল্লাহর। সেদিন ছোট থেকে ছোট পাপের হিসাব করা হবে। আর আখিরাত থেকেই বিচার করা হবে কে জান্নাতি হবে বা কে জাহান্নামি হবে। আল্লাহর সকল জ্ঞানের মালিক কেয়ামতের দিন কী কী হবে? যাকিছু জানলাম তা ক্ষুদ্র মাত্র !

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *